হিন্দোল গঙ্গোপাধ্যায়-এর কবিতা
বন্দর ও হাতচিঠি সম্পর্কে যেটুকু আমি জানি
১.
সিঁড়ি দিয়ে নেমে আসার সময় কিছু বেগ, আ বলছে শুনতে পাই| খেয়ালী কসরৎ অফিসবাড়ি মুছে ফেলল স্লেটে| আজ পোশাকের দিন নয়, বরং হাওয়ার কাছে কিছু দক্ষিণ রেখে আসি| পেয়ারা-ফুল মাপতে গিয়েছিল তোমার ঠোঁটে বন্যা সতর্কতা.. তামাম স্ট্যাম্প ছিঁড়ে নাও এই বসন্ত প্রহরে, হেঁটে যেতে চিঠির আর ঠিকানা লাগেনা
২.
মানচিত্র প্লব হলে সেরে নেওয়া যায় পশ্চিমী বোঝাপড়া| কয়েক চামচ জলপাইগুড়ি মিশছে আমার জলবায়ু| ঝাউবন দেখেছিল কাল, বৈশাখী যৌবন খোঁপা সাজছে এমন চান্দ্রমাসে| মিলনের পর বৃষ্টি-শরীর দুজনের সব দ্রব| জখম মেঘ গুছিয়ে তুলি আসমানী আলনায়, সামান্য দূরেই ভিজে হাওয়ার ইন্টারভিউ শুরু হবে…
৩.
ঠিক যেভাবে কেউ নয় কারো, কবিতা আলাপ করে প্রজনন পর্যায়ে| ওইটুকুই| দাঁড়ি টেনে দিলে বৈঠা আর সীমানা মানেনি… ফলক পেরোচ্ছি, ওদের অবয়ব পাল্টে অচেনা মিশে এল ঘুম রঙের পাহাড়ে।
কোথায় দাঁড়িয়ে আজ এত লেখার পাগলামি; নিরুদ্দেশ কলামে বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা হয়| যে মেয়েটি তুষার ছাড়া পতন দেখেনি, দ্যাখেনি পুরুষ ছাড়া স্নান, একান্ত মফস্বলের বৃষ্টি অবধি তাকে পৌঁছে দাও, অভিধান লেখা হোক সম্পর্ক শব্দটা নিয়ে..
৪.
সাদা পাতার ওপর মরসুম নিভে এলে টের পাই, আজ নষ্টদিন| আমাদের সব আলো এভাবেই ঘুম হয়ে যাবে| দিঘার বাড়িতে সেদিন দুপুর কিনে এনেছিলে অনেকটা| তোমার পোশাকের মত শরীর শিখিনি বলে হিংসে হয়| ঠোঁট, আঙুলে রোগ বিছিয়ে দিই, এতটা নিখুঁত নও তুমি আর| আজ ওষুধ খাব একসঙ্গে, বাইরে তখন রাতচরা পাখিদের স্কুল, চাঁদ মাখতে এসে উন্মত্ত ঢেউ-দল ভিজে উঠবে আরও…
‘..নৈহর ছুট হি যায়’
উঠে আসা শরণাগতি
সমস্ত ভারাতুর দিয়ে শস্য বুনছে মহুলের।
আলোতে সিজলার মাখিয়ে দুপুর গ্রীষ্ম হল..
যাদের ছেড়ে কাজ চলে গেছে
হাওয়া এবং ঘড়ির খেলা তাদের সহজাত মনে হয়,
অথচ কি বিষম…
স্পট নিভে যাচ্ছে নাট্যমঞ্চে
টিকিট কাটছে রাত্রিকালীন বাচিক ও যাবতীয় কারিকুরি
স্লিভলেস নিয়ে আড্ডায়, গাঢ় রঙ মনে ধরেছিল আমার
নতুন ধানের দুধে ওই তার ডাকনাম লেগে রইল
এপর্যন্ত আলেয়াকথা
উত্তরণ খুঁজে পেতে অবয়ব মিশছে শৈশবখেলায়।
খরোষ্ঠি লিপির মত ম্লান
এ জীবন ও মধুছন্দ উপকূলবর্তী পড়ে থাকে
যে শহরে ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে না
সেখানে তোমার ঘরবাড়ি আমি কখনও রাখিনি…

পরিচিতি : হিন্দোল গঙ্গোপাধ্যায় ব্যাঙ্গালোরে পরিসংখ্যানবিদ হিসেবে কর্মরত। রাশিবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। যুক্ত ছিলেন বহুভাষিক পত্রিকা ‘ইন্ডিয়ারি’র সাথে। বর্তমানে গ্রীক কবিতার ধারাবাহিক অনুবাদক হিসেবে ‘অপরজন’ পত্রিকার সাথে যুক্ত। ‘কবিতাডিহি’ পত্রিকার জন্য অনুবাদ করেছেন নোবেলজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কবি ডেরেক ওয়ালকটের কবিতা। হিন্দোলের কবিতা প্রকাশিত হয়েছে একাধিক পত্রপত্রিকায়। পছন্দ বই পড়া, লেখালেখি, ট্রেকিং, রান্না ও ছবি তোলা।
Related posts:
Posted in: Poetry, September 2019